সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৭ অপরাহ্ন
রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
দেশ ও জাতির কল্যানার্থে বিরতিহীন অভিযানের মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস, অস্ত্র ও জঙ্গিবাদ নির্মূলসহ দেশের সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায়ের লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। এই ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে সারা দেশব্যাপী পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কতৃক যথারীতি অভিযান চলমান রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা- সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো- ১/ মোঃ ফরিদুল ইসলাম, ২/ মোঃ নাসির চৌধুরী, ৩/ মোঃ নাসিম মাহমুদ, ৪/ জুয়েল রানা।
গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৪-টি মোবাইল ফোন ও বেশ কিছু ভুয়া নিয়োগপত্র, চেক ও স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ২০২৪ইং দুপুরে ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এমএলএসএস পদের চাকরী দেওয়ার কথা বলে এক জনের কাছ থেকে ১২ লক্ষ টাকা নিয়ে নিয়োগপত্র প্রদান করে একটি প্রতারক চক্র। উক্ত নিয়োগপত্র নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে যোগদানের জন্য গেলে ভিকটিম জানতে পারেন নিয়োগপত্রটি ভুয়া।
পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে মোবাইল ফোন বন্ধ পায় ভিকটিম। প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে গত (৫ মার্চ) ডিএমপির চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর হলে গোয়েন্দা- সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ তদন্ত শুরু করে।
তিনি বলেন, মামলা তদন্তকালে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করে গতকাল বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা গত দুই-তিন বছর যাবৎ চাকরি প্রত্যাশীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদের হোয়্যাট্স অ্যাপ ও মেসেঞ্জার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রেলপথ, খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়, কারা অধিদপ্তর, পররাষ্ট্র দপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বিআরটিসি, বিএডিসি, এলজিইডি, সচিবালয়, বিভিন্ন ব্যাংক, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিয়ন, মেট্রোরেল, এয়ারপোর্ট, তিতাস গ্যাস ও ওয়াসায় আউটসোর্সিং এবং সেনাবাহিনীর সিভিল পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে রাজধানীর চকবাজার থানায় দেশের প্রচলিত আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। উল্লেখ্যিত রুজুকৃত মামলায় আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিঃ দ্রঃ চাকরিপ্রত্যাশীদের প্রতারণা এড়াতে এই গোয়েন্দা কর্মকর্তার পরামর্শ গুলো হলো যথাক্রমে-
(১) যে কোন চাকরিতে যোগ্যতার ভিত্তিতে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়। অনৈতিক উপায়ে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা না করা।
(২) প্রতারক চক্র ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে প্রতারণা করে থাকে। তাই বিজ্ঞপ্তির সত্যতা যাচাই করার জন্য জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্র ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ওয়েবসাইটের সহায়তা নেওয়া।
(৩) সরকারী চাকরিতে কেবল মাত্র সরকার নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত নির্দেশনা মোতাবেক যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা।
(৪) প্রতারিত হলে নিকটস্থ থানা পুলিশকে তাৎক্ষণিক অবহিত করা।